দেশচিন্তা ডেস্ক: ডিম প্রোটিনে সমৃদ্ধ, প্রয়োজনীয় ভিটামিনে ভরপুর এবং প্রায় প্রতিটি খাবারের সঙ্গে সহজে মানানসই। সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে দ্রুত রাতের খাবার তৈরি, ডিমের নানাবিধ ব্যবহার অতুলনীয়। কিন্তু এই ডিম যদি এক মাস ধরে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার অংশ করে নেন, তাহলে কী হবে? একসময় কোলেস্টেরলের মাত্রার জন্য এগুলোর সমালোচনা করা হলেও, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো একেবারেই ভিন্ন গল্প বলে। ৩০ দিন ধরে প্রতিদিন ডিম খেলে কী ঘটে, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. পেশী তৈরি করে
ডিম হলো একটি সম্পূর্ণ প্রোটিনের উৎস, যার অর্থ পেশী মেরামত এবং বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডই এতে থাকে। পোল্ট্রি সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত ডিম খেলে তা পেশীর ভর বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে যখন এর পাশাপাশি ব্যায়ামও চলতে থাকে। ২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডিমের উচ্চমানের প্রোটিন সহজে হজমযোগ্য এবং ওয়ার্কআউটের পরে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
২. হার্ট ভালো রাখে
কয়েক বছর ধরে কোলেস্টেরলের উদ্বেগের কারণে ডিমকে সন্দেহের চোখে দেখা হতো। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিমিত ডিম খেরে তা আসলে হার্টের জন্য উপকারী। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডিম খেলে তা এইচডিএল (ভালো কোলেস্টেরল) বৃদ্ধি করে এবং এলডিএল কণার ভারসাম্য বজায় রাখে, যা বেশিরভাগ মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডিমে কোলাইন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও প্রচুর থাকে যা প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন এক থেকে দুটি ডিম সাধারণত সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিরাপদ।
৩. মস্তিষ্ক এবং চোখ তীক্ষ্ণ থাকে
ডিম কোলাইনে ভরপুর। কোলাইন হলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতিশক্তি এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। ২০২৩ সালের গবেষণা অনুসারে, কোলাইন নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে যা মস্তিষ্ককে সক্রিয় এবং মনোযোগী রাখে। এছাড়াও, ডিমের কুসুমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন এবং জেক্সানথিন চোখকে নীল আলোর ক্ষতি এবং বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
আপনি যদি ওজন কমাতে বা বজায় রাখতে চান, তাহলে ডিম সত্যিই পরিবর্তন আনতে পারে। এতে প্রোটিন বেশি থাকে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্ত রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া কমাতে সাহায্য করে। ২০০৯ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সকালের নাস্তায় ডিম খান তারা সারা দিন কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন।
৫. ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী
ডিম কেবল আপনার শরীরের জন্যই ভালো নয়, এটি আপনার চেহারাও উন্নত করতে পারে। এতে বায়োটিন, ভিটামিন ডি এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বক, চুল এবং নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ২০১৭ সালের গবেষণা অনুসারে, বায়োটিন চুলকে শক্তিশালী করে এবং ভাঙা কমায়, অন্যদিকে প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, যা ত্বককে মসৃণ এবং আরও নমনীয় করে তোলে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.