দেশচিন্তা ডেস্ক: আলু ভাজা তেলে আমরা মাছ কিংবা অন্যান্য সবজি রান্না করছি। মানে, পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করছি। এমন কাজ রান্নাঘরে কমবেশি প্রতিদিনই ঘটছে। কিন্তু পোড়া তেল বারবার রান্নায় কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা নিয়ে সতর্ক করেছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)।
এক কড়াই তেলে লুচি ভেজে ছিলেন। সেই তেলটা তুলে রেখে দিলেন অন্য আরেক দিন রান্না করার জন্য। কোনো দিন আবার লুচি ভাজলে সেই তেলেই ভেজে নেবেন ভেবে। কিন্তু এ অভ্যাস আপনার পরিবারের জন্য বড় বিপজ্জনক।
এ ছাড়া রাস্তার বহু দোকানে পোড়া তেলেই দিনের পর দিন রান্না হয়। ভাজাভুজির তেল ফেলে দেন না অনেকেই। আর খাবারের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানাও হয় না। এতেই দিন দিন শরীরে রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
শুরুতেই একটি কথা বলা প্রয়োজন— একই তেল পুনরায় ব্যবহার করার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। কারণ ভাজাভুজি রান্না করলে সেই তেলের তাপমাত্রা ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হওয়া উচিত। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় এবং তেল বিষে পরিণত হতে পারে।
এ ছাড়া ভাজাভুজির পর তেল ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। এরপর সুতির কাপড়ে তেল ছেঁকে নিন। এ তেল এয়ারটাইট জার বা শিশিতে ভরে রেখে দিন। এমন জায়গায় রাখুন যেখানে সূর্যের আলো যেন না পৌঁছায়।
আর পুরোনো তেলের সঙ্গে নতুন তেল মিশিয়ে রান্না করতে পারেন। কিন্তু সেটা একই তেল হতে হবে। অর্থাৎ সূর্যমুখীর তেলের সঙ্গে বাদাম তেল মেশালে চলবে না। আর একই তেল এক থেকে দুবারের বেশি পুনরায় ব্যবহার করা উচিত নয়।
যদিও ভাজাভুজির তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এ ধরনের তেল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের তেলে রান্না করার খাবার খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। কিন্তু এক কড়াইয়ের তেল সবসময়ে ফেলে দেওয়া যায় না। সে কারণে কোন তেলে রান্না করছেন ও কী পরিমাণে এবং কীভাবে ব্যবহার করছেন, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।
আবার ভাজাভুজির তেল কখনো কখনো বিষে পরিণত হয়। আপনি যখনই একই তেল বারবার উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করবেন, তখন ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়। তেল অক্সিডেশনের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং অ্যালডিহাইড নামক যৌগ গঠিত হয়। এর মধ্যে অ্যাক্রোলিন, 4-হাইড্রক্সি-2-নোনেনাল (4-HNE) এবং 4-হাইড্রক্সি-2-হেক্সেনাল (4-HHE)-এর মতো আরও বিভিন্ন যৌগ থাকে। এই অ্যালডিহাইডগুলো জৈবিকভাবে সক্রিয় হয়। এসব শরীরে থাকা প্রোটিন বা ডিএনএর আবদ্ধ হয় এবং এর জেরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়। তখনই শরীরে প্রদাহ দেখা দেয়। তখন আর ওই তেল ‘হার্ট হেলদি’ থাকে না। সূর্যমুখী, সয়াবিনের মতো পলিআনস্যাচুরেটেড তেলের ক্ষেত্রেও এমনটি বেশি ঘটে থাকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.