দেশচিন্তা ডেস্ক: ইলিশের রাজ্যখ্যাত লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরের মেঘনায় জাটকা ও মা-ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে (২৫ অক্টোবর) শনিবার রাত ১২টায়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ অঞ্চলের জেলেরা।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় বেশির ভাগ জেলে ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকলেও রামগতি উপজেলার বয়ারচর ব্রীজঘাট, রামগতি বাজার ঘাট ও গাবতলী ঘাটসহ মেঘনা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে ইলিশ শিকারের খবর পাওয়া গেছে।
কোথাও কোথায় ইলিশ শিকারে নৌ পুলিশ সহায়তা করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার কয়েকটি জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা জাল ও মাছ ধরার নৌকা মেরামত করে আগেই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে নদীপাড়ের মাছের আড়তগুলো। কয়েক ঘণ্টা পর নদীতে নামবেন তারা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কমলনগরে ১৪ হাজার ৯৮ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। আর রামগতিতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ৩৬০ জন। দুই উপজেলায় মোট ৩৪ হাজার ৪৫৮ জন জেলে রয়েছে।
আলেকজান্ডার মাছঘাটের জেলে রবিউল মাঝি জানান, অন্যবারের তুলনায় এবারের নিষেধাজ্ঞা ছিল নড়বড়ে।
এ কারণে প্রচুর জেলে নদীতে মা-ইলিশ শিকার করতে পেরেছে। ফলে আমরা যারা নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে যাইনি, তারা কেউ মহাজন থেকে, কেউ এনজিও থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালিয়েছি।
বিবিরহাট উছখালী ঘাটের জেলে মফিজ মাঝি জানান, এই ২২ দিন অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছি। সরকার সামান্য কিছু চাল দেয়, তা দিয়ে তার ৯ জনের সংসার চলে না। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় বেশ খুশি তিনি।
কমলনগর উপজেলার লুধুয়া মাছঘাটের জেলে নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার তিনটা ছোট বাচ্চা, স্ত্রী, মা সবাই তাকিয়ে থাকে আমার রোজগারের দিকে। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা সুদের ওপর ঋণ নিয়ে চলেছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ, এখন নদীতে গিয়ে ওই ঋণ পরিশোধ করতে হবে, সংসারও চালাতে হবে।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ২৫ অক্টোবর মোট ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় ওইসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুদকরণ নিষিদ্ধ ছিল।
কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা ও রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সৌরব-উজ জামান বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফলতার সঙ্গে শেষ হয়েছে। মৎস্য বিভাগ, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.