দেশচিন্তা ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, লগি-বৈঠা তাণ্ডবের মাধ্যমেই মূলত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছিল। দু'হাজারেরও বেশি শাহাদাতসহ সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের সিড়ি বেয়েই ৩৬ জুলাই বিপ্লব আল্লাহ্ দান করেছেন। এখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে গঠনমূলক পজিটিভ রাজনীতি করার শিক্ষা সবাইকে নিতে হবে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও দোসরদের বিচারকার্য বাধাগ্রস্ত করে নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে যখন পরিকল্পিত প্রোপাগাণ্ডা ও অগ্নি সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তখন উচিৎ ছিলো ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে আরো সুদৃঢ় করা। চট্টগ্রামের ইপিজেড, সিলেট ও ঢাকার বিমানবন্দরসহ একাধিক জায়গায় অগ্নিকাণ্ডগুলো জনগণের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতির এ সংকট মুহুর্তে আওয়ামী রাজনীতির অনুসরণে অন্যের সভা-সমাবেশে হামলার ঘটনা বোদ্ধামহলকে ভাবিয়ে তুলছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর দেওয়ান বাজারস্থ বাংলাদেশ ইসলামি একাডেমি (বিআইএ) মিলনায়তনে এক বিশেষ কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ্ ভীরু সৎ ও যোগ্য লোক তৈরিতে মসজিদ ভিত্তিক কুরআন শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। নোয়াখালীতে সে কুরআন শিক্ষাও আজ ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার শিকার। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কুরআনের পঠন-পাঠন, তাযকিয়া তথা চরিত্র সংশোধন, কিতাব তথা কুরআনের তা'লিম এবং কুরআন বাস্তবায়ন কৌশল তথা হিকমাহ্ বা সুন্নাহ্ শিক্ষা দানের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লমীনই দিয়েছেন। ইসলামী দলগুলো কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণে সে কাজই করে যাচ্ছে আজীবন। বিএনপি বা যে দলের নামেই হোক না কেন কুরআন শিক্ষায় হামলা করে রক্তাক্ত করা চরম ফ্যাসিবাদী আচরণ। সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের আপোষহীন নেতৃত্ব 'দৈনিক আমার দেশ' পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের প্রতিনিধির উপর হামলা করে কি ফ্যাসিবাদকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠার মহড়া চলছে? দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি চলতে থাকলে ৩৬ জুলাই বিপ্লবের ফসল পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতেই পুনরায় চলে যাবে এবং এতে বিএনপির অস্থিত্বও হুমকির মুখে পড়বে। সবাইকে নিজেদের গঠনমূলক রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে যারাই জনগণের ম্যান্ডেট পাবেন তারাই সরকার পরিচালনা করবেন। জুলাই সনদে স্বাক্ষর জাতীয় সমঝোতার একটি শুভ লক্ষণ। কিন্তু সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের মাধ্যমে এটাকে আইনী মর্যাদা দিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গঠনে পেশিশক্তি ও কালোটাকার ব্যবহার রোধ করে প্রতিটি ভোট, প্রত্যেক প্রার্থী এবং প্রতিটি দলের মর্যাদা দিতে জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করা ছাড়া বিকল্প নেই। মিক্সড পদ্ধতির পিআর সিস্টেম মেনে নিলে প্রার্থী এবং দল দু'টিরই মর্যাদা রক্ষিত হবে।
উক্ত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোছাইন, মাওলানা মমতাজুর রহমান, প্রফেসর মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ফখরে জাহান সিরাজী প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.