দেশচিন্তা ডেস্ক: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে ফ্যাসিস্ট আর তৈরি হবে না, কালো টাকা ছড়া-ছড়ি থাকবে না, পেশী শক্তি ব্যবহার করা হবে না, ভোট ছিনতাই হবে না, লুটপাট হবে না, ডাকাত-গুন্ডা-বদমায়েশ আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না, কোটি কোটি টাকার নমিনেশন বাণিজ্য আর হবে না, কোন ভোট আর নষ্ট হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে এমন এক সংসদ হবে, যেই সংসদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তি, সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে। পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জয়পুরহাট জেলা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাসেম ময়দানে ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার ও জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি প্রদান এবং আপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম কাসেমী এসব কথা বলেন।
ফয়জুল করীম বলেন, আজকে যে রাজনীতিক বাংলাদেশে পরিচালিত আছে, এই রাজনীতির মধ্যে যদি ফেরেস্তাও ঢুকে সে আজাজিল হয়ে বের হয়ে যায়। ইসলামী রাজনীতির মধ্যে আজাজিল ঢুকলে ফেরেস্তা হয়ে বের হয়ে যায়। আবরার ফাহাদকে কারা হত্যা করেছে? বুয়েটের ছাত্ররা, তারা সবচেয়ে ভালো ছাত্র। কিন্তু দল করার কারণে তারা খুনি হয়ে গেছে। হাজারো ছাত্র অস্ত্রবাজ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিএনপির ছাত্রদলের ছাত্ররা ছাত্রদলকে হত্যা করছে। ছাত্রদলের ছাত্ররা যুবলীগের মানুষদের হত্যা করছে। যুবলীগের লোক বিএনপিকে হত্যা করছে। এরা খুনি, ডাকাত, বদমায়েশ, ধর্ষক, গাঁজাখোর, অস্ত্রবাজ ছিল না। কিন্তু ওই দল তাদেরকে এসব বানিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৫৩ বছর যারা শাসক ছিলেন, তারা এই জাতীকে মুক্তি দিতে পারেননি। আমরা আজকে জিয়াউর রহমানের আদর্শের কথা বলি। জিয়াউর রহমান এইটা করেছেন, সেটা করেছেন। জিয়াউর রহমানের আদর্শের বয়ানে সাত্তার সাহেবকে আমরা ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? কিন্তু তিনি থাকেই পারে নাই। জিয়াউর রহমানের আদর্শের বয়ানে ১৯৯১ সালে আমরা খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? ২০০১ সালে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? কিন্তু এই সময় আমরা কি দেখেছি। জিয়াউর রহমান সাহেবের আদর্শ বিক্রি করে আপনারা শুধু ১৯৯১ সাল থেকে ৯৬ পর্যন্ত দেশেকে গোটা দুনিয়ার মধ্যে দুর্নীতিতে তিনবার চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এটা আমাদের দোষ না, দোষ আপনাদের। আমরা তো ক্ষমতায় ছিলাম না? আমরা আর আদর্শ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা রসূলের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাই। একাত্তরের চেতনা, উমুকের চেতনা, এসব বাদ দেন। আমরা মদিনার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হই। কোরআন-হাদীসকে বাস্তবায়ন করি।
তিনি আরও বলেন, যারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে নিজে নৌকা চালাতে পারে না। যারা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে নিজেরা ধান কাটতে পারে না। যারা লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করে নিজেরা লাঙ্গল বইতে পারে না। নৌকা চালায় গরিবরা, ধান কাটে গরিবরা, লাঙ্গল বইতে পারে গরিবরা। কিন্তু যারা নির্বাচন করে একজনও গরিব না, কিন্তু মার্কা সব গরিবদের। তারমানে ওদের সব ধোকাবাজি। ঘুমের সময় কেউ নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল বুকে নিয়ে ঘুমায় না। কিন্তু হাতপাখা এমন একটা মার্কা যে নির্বাচন করে সেও চালাতে পারে, যে সর্মথন করে সেও ঘুরাতে পারে। হাতপাখা পুরুষ-মহিলাদের। হাতপাখা শান্তি দেয় গরিব-ধনীদেরকে। সবাইকে হাতপাখা শান্তি দেয়। কাজেই আগামীর মার্কা হাতপাখা মার্কা।
জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, জেলা জামায়াতে ইসলামী জেলা কমিটির আমীর ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ, জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম মাসুদ, জেলা নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ওমর আলী বাবু প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.