দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অন্তর্গত ব্যুরো অব বিজনেস রিসার্চ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী সেশন আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টায় চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটোরিয়ামে সম্পন্ন হয়েছে।
"ব্যবসার ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন" বিষয়ক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কনফারেন্স আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, আমরা চাই এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি বেশি হোক ক্যাম্পাসে। এ ধরনের গবেষণাধর্মী আয়োজনকে আমরা সব সময় উৎসাহিত করি। উপাচার্য বলেন, আমাদের দেশে অনেক পণ্য আমরা বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে থাকি। অথচ চাইলে সেসব পণ্য আমরা দেশে উৎপাদন করে নির্ভরশীলতা কমাতে পারি। এর জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্ভাবনী মনোভাব। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলে যদি কেউ জুসের ফ্যাক্টরি করে, সেখানে যে পরিমাণ কম খরচে জুস বানানো যাবে, সেটা ঢাকায় কিংবা অন্য জায়গায় ফ্যাক্টরি করলে পারা যাবে না। কম টাকায় সেটা সারাদেশে সরবরাহ করা যাবে। আবার রাঙামাটিতে কেউ কলার চিপস তৈরির কারখানা করলে কম টাকায় কলা কিনে চিপস বানানো সম্ভব। এ রকম নানান বিষয়ে উদ্যােগ নিলে নির্ভরশীলতা কমবে। আশা করি এই কনফারেন্স থেকে ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন নতুন ধারণা উঠে আসবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন ও ডিন প্রফেসর ড. মো. তৈয়ব চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স কমিটির আহ্বায়ক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কামিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আইয়ুব ইসলাম ও সদস্য সচিব ও ব্যুরো অব বিজনেস রিসার্চের ডিরেক্টর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিচ দেন প্রফেসর ড. নরম্যান ক্যানেথ সোয়াজো এবং আমন্ত্রিত স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম) এর প্রফেসর ড. জালেহা ইয়াজিদ, আসাম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান লস্কর, সেন্ট জেভিয়ার কলেজের প্রফেসর ড. সঞ্জীব কুমার বসু। অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন ব্যুরোর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আবদুর রহমান। প্রফেসর ড. মু. জাবেদ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সেশনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যগণ, অনুষদসমূহের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত প্রায় ২০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, যারা উদ্ভাবনকে তাদের সংস্কৃতির অংশ করতে পারে, তারাই ভবিষ্যতে টিকে থাকবে এবং উন্নতি করবে। এছাড়া প্রযুক্তি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা আমাদের কাজ করার পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিয়েছে। ভবিষ্যতে সফল হতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন হতে হবে, প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং একই সাথে টেকসই উন্নয়নের নীতিগুলো মেনে চলতে হবে। এই তিনটি বিষয় একে অপরের পরিপূরক। এগুলো একটি সফল ও দায়িত্বশীল ব্যবসার ভিত্তি তৈরি করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রেক্ষাপট দ্রুত বদলে যাচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি হলো উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং টেকসই উন্নয়ন। প্রযুক্তি এখন শুধু একটি সহায়ক উপকরণ নয়, এটি ব্যবসার প্রতিটি ধাপের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে ডেটা অ্যানালিটিক্স—এগুলো আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে আরও নির্ভুল করছে, উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে এবং গ্রাহকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করছে।
কি-নোট স্পিকার প্রফেসর নরম্যান ক্যানেথ সোয়াজো বলেন, টেকনোলজি সাসটেইনএ্যাবিলিটিকে তখনই প্রশ্নবিদ্ধ করে যখন নৈতিকতা হারায়। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাসহ একাডেমিক রিসার্চ গ্রান্ট, রিসার্চ ম্যাকানিজম, সাসটেইনএ্যাবল ডেভেলপমেন্ট—সবকিছুই টেকনোলজি এমবেডেড এবং নৈতিকতার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই সাসটেইনএ্যাবল পৃথিবী গড়তে নৈতিকতার প্রশ্নে কোন ছাড় দেয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী সেশনের পর সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সাতাশটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মোট ১০৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.