আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পীর ছাহেব বায়তুশ শরফ বলেন- ইসলামি সাহিত্য সংস্কৃতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (স.)

দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:

 বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স্ঃ) উদ্যাপন উপলক্ষে চারদিন ব্যাপি ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানমালায় মনোজ্ঞ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান “পাখ-পাখালির আসর” ১৮ নভেম্বর ৯ রবিউল আউয়াল  রবিবার বাদে মাগরিব চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধ্যাত্মিক দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন বায়তুশ শরফ দরবারের মাননীয় পীর ছাহেব বাহ্রুল উলূম শাহসূফী আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (মঃজিঃআঃ) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন- ইসলামি সাহিত্য সংস্কৃতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (স.)। সমাজকে সঠিক পথ নির্দেশ দানের ক্ষেত্রে ইসলামী সাহিত্য সংস্কৃতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাহিত্যের আবেদন হলো মানুষের মন ও অনুভূতির কাছে। মন বা অনুভূতি মানুষকে যেভাবে, যে পথে তাড়িত করে, সেটাই হয় সেই নির্দিষ্ট মানব সমাজের লক্ষ্য বা আদর্শ।

সেজন্য সাহিত্য সংস্কৃতির যারা চর্চা করেন, তাদের সৃষ্টিকর্মে উৎসাহ প্রদান যেমন প্রয়োজন, আবার তাদেরকে যথোপযুক্ত পথ নির্দেশনা প্রদান আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলে পাক স. প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুপ্রেরণা উৎসাহ আর সহযোগিতা যে ইসলামি সাহিত্য সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রভূত প্রভাব ফেলেছিল তা অস্বীকারের কোন প্রশ্নই উঠেনা। তাঁর চতুষ্পার্শে যে সকল আলোর আবাবিল, সাহাবা কিরাম রা. ছিলেন তাঁদের অনেকেই সে সময়ের একেকজন বিখ্যাত কবিও ছিলেন। কবি লাবীদ, আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা, কা’ব ইবনে মালিক ও হাস্সান ইবনে সাবিত রা. সহ প্রচুর কবির নাম উল্লেখ করা যায়। তাঁদের মধ্যে এমনও ছিলেন যাঁরা আবৃত্তি করতে করতে তরবারী কোষমুক্ত করে শত্রুপানে অগ্রসর হয়েছেন। আবার কেউ কেউ কবিতা আবৃত্তি করতে করতে শূলিকাষ্ঠের দিকে এগিয়ে গেছেন আর হাসতে হাসতে শাহাদাত বরণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত খুবায়ব রা. এর কথা উল্লেখ করা যায়। মহানবী স. সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি উদার পৃষ্ঠপোষকতার উদাহারণ স্বরূপ বলা যায়- ইসলাম গ্রহণের পর কা’ব ইবনে যুহায়র একটি বিখ্যাত প্রশস্তি গাথা- ‘বানাত সু’আদ’ রচনা করেন। এই ‘বানাত সু’আদ’ কবিতাটি শুনে রাসুল সা. এতোই অভিভূত হয়ে পড়েন যে, তিনি তাঁর নিজ কাঁধ থেকে অতিমুল্যবান চাদরটি কবিকে উপটৌকন হিসেবে দিয়ে তাঁকে বিরল সম্মানে ভূষিত করেন। এমনকি রাসুল পাক স. মসজিদে নববীতে কবি হাস্সান ইবনে সাবিত রা. এর জন্য একটি উঁচু মিম্বরও তৈরি করে দিয়েছেন। সুতরাং সমাজ উন্নয়নে চাই ইসলামী সাংস্কৃতির বিকাশ। সুস্থ সাংস্কৃতিক কর্মকা- উপহার দেয়ার জন্য ইসলামী সাংস্কৃতিক শিল্পীদেরকে নৈতিক গুণে বলীয়ান হতে হবে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আই.এম.এস.গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী জনাব আলহাজ্ব আবুল বশর আবু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা শাহ্ আবদুল জব্বার ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম এর চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল হাই নদ্ভী, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের খতিব- আলহাজ্ব মাওলানা নুরুল ইসলাম, মজলিসুল ওলামা বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুর রশিদ নুরী, মাওলানা কাজী জাফর আহমদ, মাওলানা নুরুল আলম ফারুকী, বায়তুশ শরফ আন্জুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আমান উল্লাহ খান ও আলহাজ্ব মীর মুহাম্মদ আনোয়ার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব লুৎফল করিম, ঈদে মিলাদুন্নবী স. উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব রফিক আহমদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, এস.আলম গ্রুপের সম্মানিত পরিচালক- রাশেদুল আলম খোরশেদ, এ.বি.কে মহিউদ্দিন শামীম, আলহাজ্ব মিফতাহুল হুদা, আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম, আলহাজ্ব আহমদ হোসাইন, আলহাজ্ব নাজেরুল হক, উপাধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ব্যাংকার মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, আলহাজ্ব আবুল কাশেম খান, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা ফরহাত আলম, মাওলানা আবদুল খালেক, মাওলানা সিরাজুল হক নদভী, মাওলানা মোহাম্মদ মূসা, আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার আবু তাহের, আলহাজ্ব ইউসুফ চৌধুরী, আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, শাহজাদা মাওলানা সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ বেলাল, হাফেজ মাওলানা নিজাম উদ্দিন, মাওলানা কাজী শিহাব উদ্দিন, মুহাম্মদ আবদুল খালেক, শাহজাদা মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, মাওলানা আবদুশ শাকুর, মাওলানা নুর উদ্দিন মাহমুদ, এহছানুল হক মিলন প্রমুখ।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন- মাসিক দ্বীন-দুনিয়ার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ।

এ বছর বায়তুশ শরফ আন্জুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যে চারজন বিশিষ্ট গুণী ব্যক্তিকে সংবর্ধনা ও বায়তুশ শরফ স্বর্ণপদক প্রদান করবেন তারা হলেন- ১) দ্বীনি শিক্ষার প্রচার-প্রসার, ইলমে হাদীস চর্চা ও শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বিশেষ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ- আলহাজ্ব মাওলানা আ.ন.ম তাজুল ইসলাম, অধ্যক্ষ, দৌলতগঞ্জ গাজীমুড়া কামিল (এম.এ) মাদ্রাসা, লাকসাম, কুমিল্লা। ২) প্রকৌশল শিক্ষা, প্রশাসনিক ক্ষেত্র ও ব্যাংকিং খাতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন এবং সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ- ড. ইঞ্জিনিয়ার রশীদ আহমদ চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লি.। ৩) আর্তমানবতার সেবা, শিক্ষার সম্প্রসারণ, ইসলামি সংস্কৃতির বিকাশ ও মসজিদ-মাদরাসার খেদমতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল চেয়ারম্যান, এম কে আর গ্রুপ, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। ৪) চিকিৎসা সেবা ও দুস্থ-মানবতার কল্যাণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ- ডা. মাহমুদুর রহমান ট্রমা ও অর্থোপেডিক সার্জন, লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম।

উল্লেখ্য যে,  আজ ২০ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার (১) ফোরকানিয়া প্রতিযোগিতা (তিন বিভাগে) সকাল ৯ টায়। ২) আযান প্রতিযোগিতা সকাল ১১.০০ মিনিটে। (৩) ক্বেরাত প্রতিযোগিতা ক) জুনিয়র গ্রুপ সকাল ১২.০০ মিনিটে এবং খ) সিনিয়র গ্রুপ- দুপুর ২.৩০ মিনিটে (৪) আরবি কবিতা আবৃত্তি- বাদে আছর অনুষ্ঠিত হবে।  উক্ত অনুষ্ঠানে বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে সর্বস্থরের মুসলিম ভাইদের প্রতি দাওয়াত রহিল।

পরিশেষে বায়তুশ শরফের মাননীয় পীর ছাহেব বাহরুল উলুম শাহসুফী আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (মঃজিঃআঃ) মাহফিলের সফলতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ