দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় আড্ডাস্থলে নৃশংসভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে একজনকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের।

বুধবার (২৭ আগস্ট) গভীর রাতে উপজেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের রাজারহাটের দুর্গম খুরুশকুল ইকোপার্কের কাছে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ রুবেল (৩৫) ওই গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও নার্গিস আক্তারের ছেলে।

ঘটনার সময় রুবেলের সঙ্গে থাকা মো. মোরশেদ (২৮) নামে এক যুবকও আহত হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিজ বাড়ির অদূরে হৃদয় নামে এক দূরসম্পর্কের ভাগ্নের ঘরে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন রুবেল, মোরশেদ ও আজিম। তারা প্রায় রাতেই সেখানে বসে আড্ডা দিতেন। মোরশেদ ও আজিম রুবেলকে চাচা বলে সম্বোধন করতেন।

রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে হঠাৎ ওই ঘর লক্ষ্য করে বাইরে থেকে গুলি ছোঁড়া হয়। গুলির শব্দ পেয়ে আজিম দৌড়ে পালিয়ে যায়। মোরশেদ পালাতে গিয়ে তার ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পান। এরপর গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসীরা ঘরের ভেতরে ঢুকে রুবেলকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। তার ঘাড়ে, মাথায়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে এবং গোপনাঙ্গে নৃশংসভাবে কোপানো হয়। বাম হাতের কবজিও প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

সংবাদ পেয়ে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবেলের লাশ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। আহত মোরশেদকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, রুবেল একজন পেশাদার অপরাধী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ঘটনায় মোট ১১টি মামলা আছে। এলাকার মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল। আমাদের ধারণা এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এলাকায় পুরোনো বিরোধের সূত্র ধরে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে অভিযান চালানো হচ্ছে। ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম।

স্থানীয়দের দাবি, হারুয়ালছড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। রুবেলও কিছুদিন আগে একটি বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এছাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।