দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রাম কর কমিশনের উদ্যোগে আজ ১২ নভেম্বর সোমবার সকালে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৩৯ জন সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ মেয়াদী করদাতাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ.জ.ম.নাছিরউদ্দীন বলেন অর্থনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে কর। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হলে করের পরিধি বাড়াতে হবে। আয়কর ছাড়া একটি দেশে উন্ন্য়ন সাধিত হয় না। দিন দিন বাজেটের আকার বাড়ছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২-৭৩ অর্থ বছরে বাজেট দিয়েছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। আর সেই বাজেট ২০১৮ -২০১৯ অর্থবছরে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। এই বাজেট তখনই বাস্তবায়িত হবে যদি আমরা সকলে মিলে কর পরিশোধ করি। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা দিচ্ছেন, সামাজিক নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এই সহযোগিতা, নিরাপত্তার জন্য টাকা দিচ্ছেন। এই টাকা সবই করদাতাদের দেয়া টাকা। এই প্রসংগে কর আদায়ে সহনশীলতা হওয়ার জন্য আয়কর বিভাগকে পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন আয়কর সেবাকে যেন আরো বন্ধু সুলভ করা হয়। এতে করে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে আয় করের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন আমাদের প্রয়োজনেই রাষ্ট্র, সরকারকে সহযোগিতা দিতে হবে। রাষ্টের ভিত্তি শক্তিশালী হলে আমরা গৌরবান্বিত হবো। বিশ্ববাসীর কাছে সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে পরিচিত হবো। এর জন্য প্রয়োজন মা,মাটি ও মাতৃভুমি প্রতি গভীর ভালবাসা। আর স্বদেশ প্রেম। এই সমৃদ্ধির জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হবার তাগিদ দেন মেয়র। তিনি বলেন,অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি জায়গায় এসে পৌচেছে। আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করেছি। ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত জাতিতে পরিণত হবো। তাই আমাদেরকে করের ভিত্তি মজবুত করতে হবে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন করদাতাদের সম্মাননা দিয়ে কর বিভাগ এক অন্যান্য দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছে। এতে করে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে,সচেতনাতা সৃষ্ঠি হবে। তাই বেশী বেশী করে করমেলা আয়োজনের পরামর্শ দেন মেয়র। অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্যে তাদের অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ঠ শিল্পপতি সালাউদ্দিন কাশেম খান,দিদারুল আলম ও অসিত কুমার সাহা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম কর অঞ্চল ১ এর কর কমিশনার ও মেলার সমন্বয়ক মো. মোজাহের হোসেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মিস রওশন আরা আকতার, কাষ্টম কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ সভাপতি মাহাবুবুল আলম, মহিলা চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মিস আবিদা মোস্তফা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেসর এম এ আকাশ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কর কমিশনার হারুন উর রশিদ, নাছিম গণি, মো. ইকবাল হোসেন, লুৎফুল, মো. মাহবুবুর রহমান, সৈয়দ মো. আবু দাউদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
সম্মাননা প্রাপ্ত ও করদাতা হলেন যারা : চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি কর্পোরেশন, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় এবার ১০ জন দীর্ঘমেয়াদী করদাতা মনোনীত হয়েছেন। এছাড়া ১৮ জন সর্বোচ্চ করদাতা ৬ জন মহিলা করদাতা ও ৫ জন পুরুষ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। বান্দরবানে দীর্ঘমেয়াদী করদাতা ও তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ করদাতা পাওয়া যায়নি। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তিনজন হলেন : এ কে খান গ্রুপের সালাউদ্দিন কাশেম খান (বৃহৎ করদাতা ইউনিট), মো. কামাল ও বিএসআরএম এর আলী হোসেন আকবর আলী। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী কর প্রদানকারী দুজন হলেন আবদুল মোতালেব, এসএএম শাহ সর্বোচ্চ তরুণ পুরষ (৪০ বছর বয়সের নীচে) সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মো. শাহাদাত হোসেন। চট্টগ্রামে দীর্ঘমেয়াদী কর প্রদানকারী দু’জন হলেন বিশ্বেশ্বর গুপ্ত ও সদরে আলী (সর্বোচ্চ করপ্রদানকারী তিনজন হলেন : অসিত কুমার সাহা, দিদারুল আলম ও মোহাম্মদ আব্দুল মালেক। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা হলেন রূপালী হক চৌধুরী। তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী আশিকুর রহমান লস্কর।
কক্সবাজারে দীর্ঘমেয়াদী কর প্রদানকারী দুজন হলেন : ওসমান গনি, হাফিজুল ইসলাম। সর্বোচ্চ তিন করদাতা হলেন : মিস কামরুন নাহার, মোহাম্মদ আবু কাউসার ও প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমলগীর। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা লাইলা বেগম। সর্বোচ্চ ৪০ বছর বয়সের নিচে তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ করা প্রদানকারী আবদুল মাবুদ চৌধুরী। রাঙামাটি জেলার দীর্ঘমেয়াদী কর প্রদানকারী দুজন হলেন : রবীন্দ্র লাল দে ও মাধব নাগ। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তিনজন হলেন লোকমান হোসেন তালুকদার, আবুল মনসুর ওবায়দৌল্লা ও সুলতান কামরুদ্দীন। সর্বোচ্চ করপ্রদানকারী মহিলা করদাতা মিস চিত্রা চাকমা এবং তরুন পুরষ সর্বোচ্চ করদাতা হলেন মো. আসাদুজ্জামান মহিসন। বান্দরবানের সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তিনজন হলেন মোহাম্মদ নুরুল আবছার, অমল কান্তি দাশ ও মাহবুবুর রহমান। সর্বোচ্চ করা প্রদানকারী মহিলা করদাতা মিস মে হ্লা প্রু। খাগড়াছড়িতে দীর্ঘমেয়াদি দু’জন করদাতা হলেন: স্বপন চন্দ্র দেবনাথ ও মো. শামসুল আলম। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তিনজন হলেন: মিস ফরিদা আক্তার, স্বপন চন্দ্র দেবনাথ ও শিব শংকর দেব। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী মহিলা করদাতা হলেন: মিস নুর নাহার বেগম। তরুন পুরুষ সর্বোচ্চ করদাতা হলেন: মো. আবুল কালাম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.