পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বেল্লাল মাঝি (৫০) নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির একটি তিলক পটকা মাছ বা সজারু মাছ।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের মাছটি আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের কামাল ফিস আড়তে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে এ উপকূলে কখনো এ ধরনের মাছ ধরা পড়েনি। মাছটি আড়তে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একনজর দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
গত শুক্রবার কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়া এলাকায় ওই মাছটি জালে ধরা পড়ে। তবে, মাছটি কেউ না কেনায় আড়তেই ফেলে যান বেল্লাল মাঝি।
বেল্লাল মাঝি বলেছেন, অন্যান্য মাছের সঙ্গে এ সজারু মাছটিও আমার জালে ধরা পড়ে। এর আগে কখনো এ ধরনের মাছ আমার জালে ধরা পড়েনি। মনে করেছিলাম, মাছটি বিক্রি করতে পারব। কিন্তু, এ মাছের কোনো চাহিদা না থাকায় আড়তের সামনে ফেলে রেখে চলে এসেছি।
কামাল ফিসের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেছেন, সজারু মাছ জীবনে প্রথম দেখলাম। দেখতে কেমন যেন ফোলা আর কাঁটাওয়ালা। বলতে গেলে মাছটি ভয়ঙ্কর সুন্দর।
কলাপাড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা মাছটি ‘পটকা মাছ’ (Porcupinefish)। এটি Diodontidae পরিবারের মাছ। এর ইংরেজি নাম ‘porcupinefish’ বা ‘spotted porcupinefish’। এরা নিজেদের শরীরকে ফুলিয়ে বড় করতে পারে এবং শরীর কাঁটাযুক্ত হওয়ায় শিকারীর হাত থেকে আত্মরক্ষা করে। বাংলাতে এই মাছ ‘সজারু মাছ’ বা ‘তিলক সজারু পটকা’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে এ মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, বাংলায় অনেকে একে ফোলকা বা কাঁটাওয়ালা ফোলকা মাছ বলে থাকে। এদের শরীরে একধরনের টেট্রোডোটক্সিন নামক বিষ থাকে, যা অত্যন্ত মারাত্মক। এ বিষ এতটাই শক্তিশালী যে মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। এ মাছের লিভার, ডিম্বাশয়, চামড়া ও অন্ত্রে বিষ সবচেয়ে বেশি থাকে। সামান্য পরিমাণ খেলেও হতে পারে অসাড়তা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, পক্ষাঘাত। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। এ মাছ খাওয়া উচিত নয়। রান্না করেও বিষ দূর করা যায় না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.