ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) থেকে এ পদক্ষেপ কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদ্রেয়ি শনিবার জানান, কেরেম শালোম সীমান্তপথ দিয়ে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় তাঁবু ও অন্যান্য আশ্রয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে।
তবে জাতিসংঘ এখনো এ পরিকল্পনা বা তাদের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সংস্থাটি এর আগে সতর্ক করেছিল, এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে হাজার হাজার পরিবার আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
বর্তমানে গাজা সিটিতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করছেন। তবে তাদের কোথায় সরানো হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ এ পরিকল্পনাকে ‘গাজা দখলের অংশ’ এবং ‘আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে প্রকাশ্য উপহাস’ বলে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, ক্ষুধা, হত্যাযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুতির মধ্যেই মানুষকে পালাতে বাধ্য করা মানবতার বিরুদ্ধে চলমান অপরাধ।
এদিকে, গত এক সপ্তাহ ধরে গাজা সিটির জেইতুন ও শুজাইয়া এলাকায় তীব্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিমান ও ট্যাংক হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।
হামলা থেকে রেহাই পায়নি দক্ষিণ গাজার তথাকথিত ‘মানবিক এলাকা’ আল-মাওয়াসিও। শনিবার সেখানে এক দম্পতি ও তাদের আড়াই মাস বয়সী কন্যাশিশু ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে কমপক্ষে ৬১ হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছেন। অপুষ্টিজনিত কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫১ জন। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও ১১ জন, যাদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে।
গাজার আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ ও খাবারের অভাবে ২০০’রও বেশি রোগীর জীবন সংকটাপন্ন। চিকিৎসকরা সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিদিন বাড়ছে অঙ্গচ্ছেদের সংখ্যা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে অন্তত ১৪ হাজার ৮০০ রোগীর জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার প্রয়োজন, যা স্থানীয়ভাবে পাওয়া সম্ভব নয়।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বরশ জানিয়েছেন, চলমান খাদ্য সংকটের কারণে প্রায় ৪০ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.