আজ : বৃহস্পতিবার ║ ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বৃহস্পতিবার ║ ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২০শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

গাজায় একদিনে নিহত ৬৯, পৌঁছাল ৬১ হাজার ৫০০ জনে

সোমবার দিনভর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৯ জন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৬২ জন। এ দিন সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারের পর ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৪৯৯ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৫ জন ফিলিস্তিনি।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে যেসব নিহত ও আহতকে আনা সম্ভব হয়েছে— কেবল তাদেরকেই ধরা হয়েছে হিসেবের মধ্যে। ধ্বংসস্তূপের তলায় এবং সড়কে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে—যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ এজন্য দায়ী। ফলে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আহত ও নিহতের মোট সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর পাশাপাশি সেখানে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রীর প্রবেশও সীমিত করেছে ইসরায়েল। ফলে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেখানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় না খেতে পেয়ে এবং অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যু হয়েছে ২২২ জনের। এদের মধ্যে ১০১ জনই শিশু। সোমবার খাদ্যাভাব ও অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুসহ ৫ জনের।

খাদ্য ও ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদেরও নির্বিচারে গুলি করছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ত্রাণ নিতে গিয়ে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৭৭২ জন। অপুষ্টিজনিত কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছে এবং ত্রাণ নিতে গিয়ে যারা নিহত হয়েছেন, তাদেরকেও মোট নিহত ও আহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

’২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।

কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত প্রায় ৫ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৯ হাজার ৯৮৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪১ হাজার ৫৩৫ জন।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ