ঢাকা ব্যূরো : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বিগত সাড়ে ১৫ বছর ধরে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি।
এমনকি মাদরাসাগুলোতেও তাদের স্বনামে দাওয়াত দেয়ার পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল। ছাত্রসমাজ থেকে দূরে রাখতে ছাত্রশিবিরের নামে নানা রকম মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে তাদের নেগেটিভ চরিত্রের সংগঠন হিসেবে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা বাসা থেকে তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা মনে করেছিল, শিবিরকে তারা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে, শিবিরের নাম-নিশানা মুছে ফেলে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ছাত্রশিবির এখন ছাত্রসমাজের কাছে সবচেয়ে আপন সংগঠন। সাধারণ ছাত্রসমাজ শিবিরকে সভ্য, ভদ্র এবং মেধাবী ছাত্রদের ঠিকানা হিসেবে দেখে। ২০ জানুয়ারি সোমবার সকাল ৮টায় রাজধানীর শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক আয়োজিত শাখা দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের সঞ্চালনায় সারাদেশে শাখা দায়িত্বশীল কর্মাশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মাশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক দফতর সম্পাদক আলমগীর মোহাম্মদ ইউসুফ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্ররা শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি চরিত্রে বিকাশ লাভ করুক, আর এ দায়িত্ব শিবিরকেই নিতে হবে, যা অন্য কোনো সংগঠনের পক্ষে সম্ভব নয়। কিছু সংগঠন নিজেদের বড় মনে করলেও তাদের কর্মসূচিতে চরিত্র গঠনের কার্যক্রম নেই, বরং চারিত্রিকভাবে দেউলিয়া সংগঠনগুলো ছাত্রশিবিরকে প্রতিপক্ষ মনে করে। আর কিছু ইসলামী সংগঠন এখনো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সঠিক অবস্থান তৈরি করতে পারেনি। এ অবস্থায় শিবিরকেই ছাত্রসমাজের চরিত্র গঠন ও মানসিক উৎকর্ষ সাধনের দায়িত্ব নিতে হবে।
ছাত্রসমাজের প্রিয় ও আস্থায় যে জায়গা তৈরি হয়েছে, সেটাকে নিয়ামত ও বাড়তি সুযোগ মনে করে অন্তরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বেশি বেশি কাজের মাধ্যমে তার জন্য শুকরিয়া আদায় করা জরুরি। দীর্ঘ প্রতিকূল সময়ে সংগঠনটি টিকে ছিল, জনসংখ্যা আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি হয়নি। কিন্তু এখন অনুকূল পরিবেশে এক মুহূর্তও নষ্ট না করে ছাত্রসমাজের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে এবং তাদের চরিত্র গঠনের গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছাত্রশিবির নামক বাগানের মালি। আমাদের সামনে শহীদদের রক্তের উত্তরাধিকার ও বিপুল দায়িত্ব রয়েছে। এই পথ ফুল বিছানো নয় বরং এটি কণ্টকাকীর্ণ। সংগঠনের প্রতিটি দায়িত্বশীলের উচিত এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে বিবেচনা করা।‘
তিনি সূরা আহজাবের ৭২ নম্বর আয়াত উল্লেখ করে বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতসমূহের কাছে আমানত পেশ করেছিলেন, কিন্তু তারা তা বহন করতে অপারগ হয়। অথচ মানুষ তা বহন করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি কাজ ইসলামের নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত হতে হবে। দায়িত্বশীল হিসেবে আমাদের উচিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্নেহশীলতা ও করুণার গুণাবলি অর্জন করা। সহজ-সরল জীবনে অভ্যস্ত হওয়া এবং অহংকার থেকে মুক্ত থাকা একজন দায়িত্বশীলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: imranctgnews@gmail.com
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.